শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট: বরিশালে বাড়িওয়ালার বিরুদ্ধে পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙ্গে মালামাল আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক কাজী মো. জাহাঙ্গীর এ ঘটনায় বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং প্রতিকার পেতে বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। চতুর বাড়িওয়ালা অভিযোগ ও মামলার বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ কমিশনার বরাবর পত্রিকার প্রকাশকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে অভিযোগে পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। অফিস তালাবদ্ধ থাকায় চলতি বছর ২৫ জানুয়ারী থেকে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের স্থানীয় দৈনিক দখিনের খবর পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নগরীর হাসপাতাল রোডস্থ (অমৃত লাল দে সড়ক) হালিমা মঞ্জিলের ৩য় তলার ৪টি কক্ষ ভাড়া নিয়ে বাড়িওয়ালা আলহাজ¦ আব্দুর রহমানের সাথে ৫ বছরের একটি ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্র করেন। শুরুতে বাড়িওয়ালা চুক্তি শর্ত ভঙ্গ করে ২০১৮ সালের জানুয়ারী মাসে ভাড়াটিয়া অংশ বুঝিয়ে দেন। পরবর্তীতে ভাড়াটিয়া চুক্তিপত্রের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বাড়িওয়ালা জনৈক আইনজীবীর সাক্ষর জাল জালিয়াতি করে পত্রিকার সম্পাদক কাজী মো. জাহাঙ্গীরকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান এবং প্রতিনিয়ত বাড়ি ছাড়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছেন। এমন পরিস্থিতিতে পত্রিকার সম্পাদক কাজী মো. জাহাঙ্গীর ব্রেইন স্ট্রোক করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ কারণে নিয়মিত অফিস করতে পারেননি তিনি। এ ঘটনায় সম্পাদক কাজী মো. জাহাঙ্গীর ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিলে কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই অভিযোগ এখন পর্যন্ত ফাইল বন্দি অবস্থায় রয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছর ২৫ জানুয়ারী রাতের আধারে বাড়িওয়ালা আব্দুর রহমান অফিসের তালা ভেঙে সকল মালামাল সরিয়ে ফেলে এবং অফিসের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৫৫ হাজার টাকা ও ২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও অফিসে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ দলিল পত্রাদি নিয়ে যায়। পত্রিকার সম্পাদক বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক থানা পুলিশকে অবহিত করেন এবং লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
দখিনের খবর পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক কাজী মো. জাহাঙ্গীর বলেন, থানায় এজাহার দিলেও থানা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তের দ্বারা অবৈধভাবে লাভবান হয়ে কোনরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বাধ্য হয়ে তিনি পুনরায় পুলিশ কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এবং বাড়ী ভাড়া নিয়ন্ত্রক আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শুনানী হলেও এখনো আদালত রায় দেননি জানিয়ে তিনি বলেন, আমার পত্রিকার গত ৬ বছরের প্রকাশিত সংখ্যা, কম্পিউটার, প্রিন্টার, আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র বাড়িওয়ালা আত্মসাৎ করেছেন।
এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী এএসআই রুমা জানান, তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে অফিস তালাবদ্ধ দেখেন। পরে বাড়িওয়ালাকে ডেকে অফিসের তালা খুলে ভেতরে ঢুকে দেখেন অফিসে কোন মালামাল নেই। বাড়িওয়ালাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি এক পর্যায়ে স্বীকার করেন অফিসের মালামাল তার ভবনের ৫ম তলায় নিয়ে রেখেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি ঘটনার সত্যতা যতটুকু দেখেছেন সেই অনুযায়ী উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করবেন।
অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা আলহাজ¦ আব্দুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তবে যেহেতু আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বাদী কাজী মো. জাহাঙ্গীর। আদালত যে রায় দিবেন তিনি তা মেনে নেবেন।
Leave a Reply